নয়া শ্রম নীতি এখনই কার্যকর নয়! কমছে না 'টেক-হোম স্যালারি'


১ এপ্রিল থেকে নয়া বেতন বিধি কার্যকর হচ্ছে না। ফলে, চাকুরিজীবীদের 'টেক-হোম পে' আপাতত কমছে না।শ্রম সংক্রান্ত পুরনো ২৯টি আইন সংশোধন ও পরিমার্জন করে সেই জায়গায় মাত্র চারটি নয়া আইন-ওয়েজ বা বেতন, কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা, কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও কাজের পরিবেশ, এবং মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক-গত বছরই সংসদে পাশ হয়েছিল।

সরকার জানিয়েছিল, বৃহস্পতিবার ১ এপ্রিল থেকে আইনগুলি কার্যকর করা হবে বলে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল। ওই আইনগুলি কার্যকর করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিধি-নিয়ম তৈরি করাও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, মাত্র ছ'টি রাজ্য -- উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা ও জম্মু-কাশ্মীর -- ছাড়া বাকি রাজ্যগুলি তাদের বিধি-নিয়ম এখনও চূড়ান্ত না করায় শ্রম সংক্রান্ত ওই চার নতুন আইন ১ এপ্রিল থেকে বলবৎ করা যাচ্ছে না। শ্রম ও শ্রমিকের বিষয়টি সংবিধানের কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার তাদের বিধি-নিয়ম চূড়ান্ত করলেও আইন কার্যকর করতে হলে রাজ্যগুলিরও সেটা করা প্রয়োজন।

কেন্দ্রীয় সরকারের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের পরেই ওই চার নয়া শ্রম আইন কার্যকর করার কথা বিবেচনা করা হবে।

নতুন ওয়েজ কোড বা বেতন বিধি অনুযায়ী, মোট অ্যালাওয়েন্স বা ভাতার (ডিয়ারনেস অ্যালাওয়েন্স বা মহার্ঘ ভাতা বাদ দিয়ে) পরিমাণ কোনও কর্মীর মোট বেতনের (পড়ুন, কস্ট-টু-কোম্পানি বা সিটিসি) ৫০ শতাংশের বেশি হতে পারবে না।

অর্থাৎ, নতুন ওয়েজ কোডের আওতায় প্রত্যেক কর্মীর মূল বেতন (বেসিক ও ডিয়ারনেস অ্যালাওয়েন্স) মোট বেতনের অন্তত ৫০% হতে হবে।

সেক্ষেত্রে, প্রত্যেক কর্মীর প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি প্রভৃতি খাতে অনুদানের পরিমাণও বাড়বে এবং তার ফলে তাঁদের 'টেক-হোম পে' কমে যেতে পারে। 

চার নয়া শ্রম আইন ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর না হওয়ায় নিয়োগকর্তা সংস্থাগুলিও খানিকটা সময় ও স্বস্তি পাবে। কেননা, নতুন বেতন বিধি মেনে শ্রমিক-কর্মীদের বেতন কাঠামো তাদের ঢেলে সাজতে হতো।

কর্মীদের এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি প্রভৃতি সুবিধা দেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা মানতে নিয়োগকর্তা সংস্থাগুলি এতদিন শ্রমিক-কর্মীদের মূল বেতন (বেসিক ও ডিয়ারনেস অ্যালাওয়েন্স) মোট বেতনের ২০-৩০ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখত। এখন ওই পরিমাণ বাড়িয়ে মূল বেতনের ন্যূনতম ৫০% করতে হলে বিভিন্ন খাতে 'ভাতা' বাবদ বরাদ্দ কমিয়ে তা মূল বেতনের সঙ্গে 'অ্যাডজাস্ট' করতে হবে। অর্থাৎ, শ্রমিক-কর্মীদের বেতন কাঠামো আমূল বদলাতে হবে।