ভারতীয় নোটে ধাতব স্ট্রিপ! ব্যবহারের ইতিহাস জানলে চমকে উঠবেন



Gamebazz ডেস্ক: ১০০ টাকা হোক আর ৫০০ টাকা ভারতীয় সব নোটের মধ্যে ধাতব স্ট্রিপ দেখা যায়। কেন এবং কীভাবে এটি শুরু হয়েছিল তা নিয়ে অনেক সময় প্রশ্ন জাগে অনেকের মনে। এটা কিভাবে কাগজের নোটের মধ্যে রাখা হয়? এই ধাতব স্ট্রিপ কোন ধাতু দিয়ে তৈরি? আসলে মুদ্রার মধ্যে ধাতব স্ট্রিপের উপস্থিতি মুদ্রার সুরক্ষা মান বিবেচনা করে। ৫০০এবং ২০০০ টাকার নোটের ভিতরে উজ্জ্বল ধাতব স্ট্রিপে কোড দেওয়া থাকে, এটি নোটের নিরাপত্তা মানকে আরও শক্তিশালী করে।


আসলে নোটের মাঝখানে ধাতব স্ট্রিপের ধারণাটি ১৮৪৮ সালে ইংল্যান্ডে আসে। এটির পেটেন্টও ছিল কিন্তু ১০০ বছর পরে তা কার্যকর হয়েছিল। এটি করার অন্যতম কারণ ছিল ছাপানো জাল নোটগুলি বন্ধ করা। দ্য ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক নোট সোসাইটি অর্থাৎ IBNS অনুসারে, ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড ১৮৪৮ সালে বিশ্বের মধ্যে প্রথম নোটের মধ্যে একটি ধাতব স্ট্রিপ লাগানোর কাজ করেছিল। যখন নোটটি আলোতে ফেলা হতো, মাঝখানে একটি কালো রেখা দেখা যেত। এটা মনে করা হয়েছিল যে, অপরাধীরা জাল নোট তৈরি করলেও তারা ধাতব স্ট্রিপ তৈরি করতে পারবে না। যদিও, পরে জাল নোট নির্মাতারা নোটের ভিতরে একটি সাধারণ কালো রেখা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল এবং মানুষ বোকা হয়ে যেত।


১৯৮৪ সালে, ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড ২০ পাউন্ডের নোটে ভাঙা ধাতব স্ট্রিপ্ রেখেছিল, অর্থাৎ নোটের ভিতরে, এই ধাতব সুতোটির জন্যে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল। তখন এটা মনে করা হত যে, অপরাধীরা এটির জাল করতে পারবে না। আইবিএনএস বলছে, জাল নোট প্রস্তুতকারীরাও সুপার গ্লু দিয়ে ভাঙা অ্যালুমিনিয়াম থ্রেড ব্যবহার শুরু করে। এটিও বেশিরভাগ নোট গ্রহণকারীদের জন্য চেনা কঠিন ছিল।


যাইহোক, সরকার হাল ছেড়ে দেয় নি। নিরাপত্তা বিষয়টি আরও সুদৃঢ় করতে একটি সিস্টেম তৈরি করেছিল যেখানে ধাতুর পরিবর্তে প্লাস্টিকের স্ট্রিপগুলিও ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৯৯০ -এর দশকে, অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক নোটগুলিতে নিরাপত্তা কোড হিসেবে প্লাস্টিকের স্ট্রিপ ব্যবহার করত। এর সাথে থ্রেডে কিছু মুদ্রিত শব্দের ব্যবহারও শুরু হয়। যা এখনো কপি করা হয়নি।


ভারতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ২০০০ সালের অক্টোবরে ১০০০ টাকার নোটের মধ্যে এমন স্ট্রিপ চালু করেছিল,যেখানে ১০০০ এবং RBI হিন্দিতে লেখা ছিল। এখন ২০০০ নোটের ধাতব স্ট্রিপটি ভেঙে থাকে এবং তার উপর RBI ইংরেজিতে এবং ভারত হিন্দিতে লেখা আছে। পাশাপাশি এই নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যটি ৫০০ এবং ১০০ টাকার নোটগুলিতেও ব্যবহার করা হয়।


০৫, ১০, ২০ এবং ৫০ টাকার নোটগুলিতে অনুরূপ স্ট্রিপ ব্যবহার করা হয়। গান্ধীজীর প্রতিকৃতির বাম দিকে এই থ্রেডটি থাকে। আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে ধাতব স্ট্রিপ ব্যবহার করত তা ছিল সরল, তাতে কিছুই লেখা ছিল না।সাধারণত ব্যাঙ্ক যে ধাতব স্ট্রিপ ব্যবহার করে তা খুবই পাতলা, এটি সাধারণত অ্যালুমিনিয়াম বা প্লাস্টিকের হয়।


ভারতে নোটের মধ্যে ধাতব স্ট্রিপের ব্যবহার বেশ দেরিতে শুরু হয়েছিল, কিন্তু ভারতীয় নোটের ধাতব স্ট্রিপটি ভালোভাবে দেখলে বোঝা যাবে যে, এটাতে দুটি রঙ আছে। ছোট নোটগুলিতে, এটি সোনালি চকচকে স্ট্রিপ থাকে, কিন্তু ২০০০ এবং ৫০০নোটের ভাঙ্গা স্ট্রিপটি সবুজ রঙের। যদিও কিছু দেশের নোটের উপর এই স্ট্রিপের রঙও লাল। ভারতের বড় নোটগুলিতে ব্যবহৃত ধাতব ফালাটি রুপোর।