ক্রিপ্টোকারেন্সির ঝুঁকিতে এখন কারা! RBI গভর্নর দিয়েছেন হুঁশিয়ারি, সামনের মাসেই বড় সিদ্ধান্ত



Gamebazz ডেস্ক: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার(RBI) গভর্নর শক্তিকান্ত দাস ডিজিটাল মুদ্রার বিপদ সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করলেন। তিনি ফিন্যান্সিয়াল স্টেবিলিটির পরিপ্রেক্ষিতে ক্রিপ্টোকারেন্সিকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক হিসাবে বর্ণনা করেছেন। RBI এবং স্টক মার্কেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা SEBI ক্রিপ্টোকারেন্সির জন্য একটি নতুন কাঠামো প্রস্তুত করতে একসঙ্গে কাজ করছে। সহজ কথায়, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে নিয়ম প্রণয়ন করতে চলেছে।


বুধবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর আবারও ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলি লং টার্মে দেশের অর্থনৈতিক এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস একটি ইভেন্টে ক্রিপ্টোকারেন্সির অনুমতি না দেওয়ার বিষয়ে তার মতামত পুনর্ব্যক্ত করেছেন, বলেছেন ডিজিটাল মুদ্রা সারা বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির আওতায় আসে না৷


এমতাবস্থায় যে কোনো ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেমের জন্য এটি একটি বড় ঝুঁকি। ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্টের আগে RBI গভর্নরের এই বক্তব্য করেছেন। যা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। উল্লেখ্য, আগামী মাসে এই রিপোর্ট আসার সম্ভাবনা রয়েছে। 


ক্রিপ্টোকারেন্সি কি


গ্রীক ভাষায় ক্রিপ্টো মানে গোপন। বর্তমানে বিশ্বে 8 হাজারেরও বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি রয়েছে। সবথেকে বিখ্যাত হল বিটকয়েন। এখন বিটকয়েন নিয়ে নিশ্চয়ই আপনার মনে প্রশ্ন জাগছে? চলুন জেনে নেওয়া যাক-


বিটকয়েন একটি মুদ্রা যা শুধুমাত্র ডিজিটাল আকারে পাওয়া যায়। এটি দিয়ে আপনি সাধারণ মুদ্রার মতই  সমস্ত কাজ করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি Phonepe এবং Paytm এর ওয়ালেটের মাধ্যমে একটি লেনদেন করতে পারবেন। কেনাকাটা করতে পারবেন কিন্তু এটি এমন একটি জিনিস যা আপনি পকেটে রাখতে পারবেন না।


হ্যাঁ, এর ওপর কোনো সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। যাদের কাছে আছে তারাই এটি ব্যবহার করতে পারবে। তবুও, ভারতে বিটকয়েন কেনা বৈধ।ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করার আগে কিছুটা এই বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকাটা জরুরি৷ তারফলে জানতে হবে এই পথে বিনিয়োগ করতে গেলে কি ধরনের পদক্ষেপ করতে হবে ৷ ফলে এদেশে বিটকয়েন, ইথেরেয়াম, ডজকয়েন ইত্যাদি ক্রিপ্টো কয়েনে বিনিয়োগ কেমন ধাপে ধাপে করা উচিত তা জানান হল-


প্রথম ধাপ হল উপযুক্ত ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ খুঁজে নেওয়া৷ যেহেতু ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের জন্য কোনও প্রতিষ্ঠিত কাঠামো নেই, সেহেতু দেখে নিতে হবে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ যেটা হল ক্রেতা বিক্রেতাদের এই ডিজিটাল সম্পদটি কেনা বেচার প্লাটফর্ম৷ এই রকম জনপ্রিয় কয়েকটা এক্সচেঞ্জ হল-WazirX, CoinDCX এবং CoinSwitch Kuber ৷


দ্বিতীয় ধাপ হল একটা অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে৷ ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ ঠিক করার পর লেনদেনের জন্য লগ্নিকারীকে ওই প্ল্যাটফর্মে একটা অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে ৷ এরপর ওই অ্যাকাউন্ট খোলা হলে এবার পরিকল্পনা করে নিতে হবে কত পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হবে এবং কোথায় বিনিয়োগ করা হবে৷ সেই সময় ওই নিদিষ্ট প্ল্যাটফর্মের নীতি ভাল করে পড়ে বুঝে নেওয়া দরকার৷ প্ল্যাটফর্মটি তখন ওই লগ্নিকারীকে তার প্রমাণ স্বরূপ সমস্ত নথিপত্র জমা দিতে বলবে যার উদ্দেশ্য হল প্রতারণা আটকানো৷


তৃতীয় ধাপ হল লেনদেনের জন্য অ্যাকাউন্টটিকে সক্রিয় করা৷ অর্থাৎ ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনার জন্য যেহেতু অর্থ লাগবে আর সে জন্য তা কেনার আগে প্রয়োজনীয় অর্থ রাখতে হবে ওই অ্যাকাউন্টে৷ সেক্ষেত্রে অবশ্য কেউ তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই নিদিষ্ট এক্সচেঞ্জেও টাকা ট্রান্সফার করতে পারে৷ তবে এ ভাবে অর্থ ট্রান্সফার করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে যে দুটি অ্যাকাউন্টের মধ্যে ঠিকমতো লিংক করা রয়েছে৷


চতুর্থ ধাপ হল বিনিয়োগ করা৷ এবার অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে ঠিকমতো লিংক করার পর এবং ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ অ্যাকাউন্টে অর্থ জমা হয়ে গেলে তখন লগ্নিকারীকে ঠিক করতে হবে কোন ক্রিপ্টো মুদ্রায় তিনি বিনিয়োগ করবেন৷ দেশের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি হল বিটকয়েন৷ তারপরেই বাজারে রয়েছে ইথেরেয়াম৷ অন্যান্য পরিচিত ক্রিপ্টো মুদ্রা হল- টেথার, ডজকয়েন, কারডানো, এক্সআরপি, বিনান্সেকয়েন৷ এবার কেনার পর লগ্নিকারীকে তার অ্যাকাউন্টের স্টোর কোডের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে যাতে হ্যাকিং সংক্রান্ত ঝুঁকি এড়ানো যায়৷ এজন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হল ক্রিপ্টো ওয়ালেটে যেন ওই কেনা কয়েন রাখা হয়৷