Gamebazz ডেস্ক: কথায় বলে যে কোনও বইয়ের কভার কিংবা সূচীপত্র দেখে যেমন সেই বইয়ের বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়। তেমনই আমাদের যোগ্যতা, কর্মক্ষমতা, অভিজ্ঞতা যাই থাকুক না কেন তা যদি সিভিতে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা না হয় তাহলে শুধু কর্মক্ষেত্রে নয়, আমাদের সামগ্রিকভাবে ব্যক্তিত্বেরও ভুল প্রতিফলন হয়। যদিও রিজিউম কিংবা বায়োডাটা হল আমাদের শিক্ষা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণী যা বিশেষত কাজের সন্ধানের জন্য নিয়োগকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়। আর সেই বায়োডাটা দেখেই নিয়োগকর্তাদের কর্মী হিসাবে আপনার প্রতি ধারণা তৈরি হয়। তাই এই রিসিউমের উপরে আমাদের চাকরিতে নির্বাচন অনেকাংশে নির্ভর করে। কারণ অনেক সময় শূন্যপদ কম থাকলেও শুধু বায়োডাটার ক্যারিশ্মাতেই আপনি চাকরি পেয়ে যেতে পারেন। তাই ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রস্তুত থাকা যতটা প্রয়োজন, ততটাই দরকার সঠিকভাবে বায়োডাটা সাজানো।
সহজ রাখুন- যে কোনও পেশার বায়োডাটা তৈরির ক্ষেত্রে প্রথমেই বায়োডাটার ভাষা যেন সহজ হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অর্থাৎ সহজ ভাষায় নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা সহ যাবতীয় তথ্য সিভিতে সাজিয়ে লিখতে হবে। সেক্ষেত্রে শব্দচয়ন হতে হবে সহজ এবং সাবলীল। অর্থাৎ নিয়োগকর্তা যাতে পরিষ্কারভাবে প্রার্থীর বিষয়ে বুঝতে পারেন সেদিকে নজর রাখা জরুরি।
ব্যকরণগত ভুল করা চলবে না- আপনার যোগ্যতা কিংবা অভিজ্ঞতা যাই থাকুক না কেন সেগুলি রিসিউমে লেখার সময়ে ব্যকরণগত ভুল করা চলবে না। অর্থাৎ বাক্য গঠন, শব্দচয়নের সঙ্গে যাতে ব্যাকরণের ভুল না হয় সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ রিসিউমে ব্যকরণগত ভুল হওয়া মানেই নিয়োগকর্তার কাছে আপনার উদাসীন এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন মনোভাবের পরিচয় পৌঁছাবে। ফলে আপনার যোগ্যতা যত ভালোই হোক কিংবা আপনি রিসিউম যত সুন্দর করেই সাজান না কেন, যদি তাতে ব্যকরণগত ভুল হয়ে থাকে তাহলে হয়েতো নিয়োগকর্তা আপনার সিভি সম্পূর্ণ না পড়েই রেখে দিতে পারেন।
বর্তমান এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য আগে দিন- রিসিউম লেখার সময়ে বর্তমান এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একইভাবে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ক্রমানুসারে সাজানো জরুরি। অর্থাৎ আপনার যদি পাঁচটি কোম্পানির অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে একেবারে শেষ কোম্পানির তথ্য প্রথমে দিয়ে ধীরে ধীরে আপনার প্রথম কোম্পানির তথ্য দিন। একইসঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রেও আপনার প্রাপ্ত শেষ যোগ্যতাকে প্রথমে উল্লেখ করে একেবারে শেষে আপনার প্রথম শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে লিখতে হবে।
গল্পের মতো লিখুন- যে কোনও ভালো গল্পই যেমন পাঠককে গল্পের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আকর্ষণ করে রাখতে পারে। অর্থাৎ গল্প ভালো হলে পাঠকের আগ্রহ দীর্ঘক্ষণ সেই গল্পের প্রতি থাকে। তাই যে কোনও পেশার রিসিউমই গল্পের মতো হওয়া উচিত। সহজ ও সাবলীল ভাষায় প্রার্থীর সমগ্র যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা সহ সামগ্রিক বিষয়টি পড়তে যেন নিয়োগকর্তার এক ঘেয়েমি না লাগে । অর্থাৎ শুধু সঠিক ও প্রাসঙ্গিক তথ্যই নয়, রিসিউম পড়তেও যাতে নিয়োগকর্তার গল্পের মতো ভালো লাগে সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
নিজের পয়েন্টের প্রেক্ষিতে তথ্য দিতে হবে- আজকের প্রতিযোগিতার বাজারে শুধু আপনার কৃতিত্ব শোনা পর্যাপ্ত নয়। অর্থাৎ রিজিউমে লেখা প্রতিটি পয়েন্টের যাতে সঠিক প্রমাণ সহ তথ্য থাকে সেদিকে নজর দিতে হবে। তাই নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং একইসঙ্গে অন্যান্য বিষয় উল্লেখের সময়ে জোর দিতে হবে তথ্যের উপর। প্রমাণ সহ তথ্য ছাড়া কোনও সিভি নিয়োগকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে না।
সঠিক ধরন মানা- প্রতিটি পেশার ক্ষেত্রে রিজিউম আলাদা হবে। তবে কিছু নির্দিষ্ট বিষয় প্রতিটি পেশার রিজিউমেই একই রাখতে হবে। অর্থাৎ যে পেশার জন্য রিজিউম তৈরি করা হবে সেই পেশার চাহিদার উপর নির্ভর করেই রিজিউমটি তৈরি করতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিটি রিজিউমেই প্রার্থীর অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা, দক্ষতাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। তবে যে কোনও পেশাতেই সঠিক ধরন মেনে রিজিউম তৈরি করা খুবই জরুরি।